পবিত্র বাইবেলের যোহন ১৪ অধ্যায়ে যীশুর মৃত্যুর আগে শেষ রাতে শিষ্যদের সংগের মহুর্তগুলো আমাদের জন্য লেখা হয়েছে। এই রাতেই শিষ্যদের একজন এহুদা স্কুরিয়ত তাঁর সংগে বিশ্বাসঘাতকতা করেছিল। তাঁর মৃত্যুর পৃর্ব মহুর্তে যীশু তাঁর শিষ্যদের বলেছিলেন যে, তিনি তাদের ছেড়ে চলে যাবেন। আমরা যেমন আগের পোস্টে দেখেছি, তাঁর কথাবার্তার সমস্তটাই ছিল অসাধারণ, প্রকৃত পক্ষে যীশু স্বর্গের সংগে তাঁর সম্পর্কের কথা বলেছেন:
১। যীশু স্বর্গ থেকে এসেছে ২। স্বর্গে যীশুর বাড়ী ৩। স্বর্গ যীশুর সংগে
কি মনে হয় আপনার? যীশু কি বলছেন? যীশু কি পাগলের প্রলব বকছেন? এমন চিন্তা দূরে থাকুক।
কেননা এই পৃথিবীতে আর কেউ এমন কথা বলে নি - কোন লোক এমন কথা মনেও আনে নি। যদি পাগলের কথা বলা যায়, যদি মন্দের কথা বলা যায়, তবে অনেক ইহুদী ধর্মীয় নেতারা চিন্তা করছিল যে, যীশু শয়তানের কাজ করছেন - একজন ঈশ্বর নিন্দুক যেহেতু তিনি নিজেকে ঈশ্বরের সমান করে তুলেছেন।
এটা তাঁর শেষ দাবি। যীশু দাবি করেন তিনি ঈশ্বরের সমান আর আমরা ধর্মীয় বহুত্ববাদের চ্যালেঞ্জ এবং সুসমাচার প্রয়োজন নিয়ে কথা বলতে অগ্রসর হচ্ছি। আমরা খুব শিঘ্রই দেখতে পাব যীশুর ঈশ্বরত্বের সমন্ধে যে দাবি তা খুবই প্রয়োজন ছিল কেননা এই পাপময় পৃথিবীতে তিনি একাই পরিত্রাণকর্তা।
আসুন, এই সকালে আমরা আমাদের পবিত্র বাইবেল খুলি ও #যোহন ১৪:৪ - ৬ পদ দেখি -
"আর আমি যেখানে যাইতেছি, তোমরা তাহার পথ জান। থোমা তাঁহাকে বলিলেন, প্রভু, আপনি কোথায় যাইতেছেন, তাহা আমরা জানি না, পথ কিসে জানিব? যীশু তাঁহাকে বলিলেন, আমিই পথ ও সত্য ও জীবন; আমা দিয়া না আসিলে কেহ পিতার নিকটে আইসে না।"
৪ পদের মধ্যে যীশু খ্রীস্ট তাঁর শিষ্যদের বলেন, "আম যেখানে যাইতেছি, তোমরা তাহার পথ জান।" এর মধ্যে দিয়ে তিনি বুঝাতে চাচ্ছেন - শিষ্যরা জানেন অথবা অবশ্যই তারা জানবে যে, যীশু দুঃখ ভোগের মধ্য দিয়ে পিতার কাছে চলে যাচ্ছেন। পুনুরুন্থানের পথ ছিল ক্রুশারোপনের মধ্য দিয়ে। মহিমার পথ হল ক্রুশের মধ্য দিয়ে।
ক. শিষ্য থোমা যীশুকে প্রশ্ন করলেন - ৫ পদে "প্রভু, আপনি কোথায় যাচ্ছেন তা - ই আমরা জানি না, তবে পথ কি করে জানব?" থোমার অজ্ঞতা লক্ষ্য করুন, তার অজ্ঞতার স্বীকারোক্তি লক্ষ্য করুন, যেখানে শিষ্য হিসাবে থোমার দুটি ব্যর্থতা আছে।
যীশুই ছিলেন ক্রুশের পথ যে পথটি থোমা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিল।
প্রথমত, যীশুর পথ যে ক্রুশের পথ ছিল তা বুঝতে থোমা ব্যর্থ হয়েছেন।
যীশু তাঁর জীবনের অনেকে সময় পরিস্কার ভাবেই তাঁর শিষ্যদের বলেছেন, যে পথে তিনি আবার তাঁর পিতার কাছ থেকে ফিরে আসবেন তা হল তাঁর মৃত্যু ও পুনুরুন্থানের মধ্য দিয়ে। তিনি আমাদের পাপের জন্য মৃত্যু বরণ করবেন এবং আমাদের ধার্মিক বলে গ্রহণের জন্য পুনুরুন্থিত হবেন।
ক্রুশের মধ্য দিয়েই ছিল মহিমার পথ। প্রথমত ক্রুশ পরে মুকুট - #যোহন ১২:৮, ৩২, ৩৫, ৮:২১, #মার্ক ৮:৩১-৩৩ পদ।
তথাপি, সুসমাচারের মধ্যে যেভাবে সহজ করে বর্ণনা করা হয়েছে, যীশুর শিষ্যরা তা বুঝতে পারে নি যে, যীশু ক্রুশকে বরণ করে নিবেন, যীশুর পুনুরুন্থানের পরে বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর ক্রুশের উপর মৃত্যুর কারণ - #যোহন ২:২২;১২:১৬ পদ।
#যোহন ২:২২ "অতএব যখন তিনি মৃতগণের মধ্য হইতে উঠিলেন, তখন তাঁহার শিষ্যদিগের মনে পড়িল যে, তিনি এই কথা বলিয়াছিলেন; আর তাঁহারা শাস্ত্রে এবং যীশুর কথিত বাক্যে বিশ্বাস করিলেন।"
দ্বিতীয়ত, প্রভু যীশুই যে একমাত্র পথ তা বুঝতে ব্যর্থ হয়েছিলেন।
থোমা বুঝেছিলেন যে, স্বর্গে যাবার পথ যীশুর জন্য যে রকম শিষ্যদের জন্য সেরকমই। এর আগে পিতর একই ভুল করেছিলেন,
"শিমোন পিতর তাঁহাকে কহিলেন, প্রভু, আপনি কোথায় যাইতেছেন? যীশু উত্তর করিলেন, আমি যেখানে যাইতেছি, সেখানে তুমি এখন আমার পশ্চাৎ যাইতে পার না; কিন্তু পরে যাইতে পারিবে।" #যোহন ১৩:৩৭
আমরা এখন সবাই ভাল করে জানি যে, পিতর নয় কিন্তু যীশুই তাঁর প্রাণ তাঁর শিষ্যদের জন্য দান করেছিলেন এবং যেহেতু তিনি মসীহ, ঈশ্বরের পুত্র ছিলেন তাঁর এই মধ্যস্থতামূলক মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তাঁর শিষ্যদের জন্য পিতার কাছে যাবার একমাত্র পথ প্রস্তত করেছেন।
যীশুর জন্য ও তাঁর শিষ্যদের জন্য স্বর্গে যাবার পথ একই রকম ছিল না। যীশুর শিষ্যরা যীশুর মত একই রকম পথ অনুসরণ করে স্বর্গে যেতে পারে নি। বরং যীশুর শিষ্যরা তাঁর উপর নির্ভর করে, যিনি তাদের পাপের জন্য মৃত্যু বরং করেছেন ও পুনুরুন্থিত হয়েছেন তাঁর উপর বিশ্বাস করে স্বর্গে গিয়েছিলেন।
যীশু থোমার এই দুটি ব্যর্থতা দেখে বিশেষ করে শেষেরটি দেখে, যীশু আবেগ ভরে বলেছিলেন তিনি কে? সুতরাং যীশু ঘোষণা করেছেন ৬ পদে -"আমিই পথ, সত্য আর জীবন। আমাদিয়ে না গেলে কেউ পিতার কাছে যেতে পারে না।"
ভাই, আপনার কানে যীশুর এই কথাগুলো কেমন করে বাজে?
যীশুর এই কথা বাইবেলের "সমস্ত সুসমাচারের মূল বিবৃতি।" তাই তো আমি মুসলিম ঘরে জন্ম নিয়েও যীশুকে প্রভু বলে গ্রহণ করতে অস্বীকার করি নি, বরং প্রভুতে সমর্পিত হয়েছি, যীশুর ক্রুশের আসির্বাদ নিজ দেহে মহা আনন্দে বহন করছি, সত্যিই তা - ই।
প্রথমত, এর মধ্যে তিনটি অটল দাবি রয়েছে। এখানে যীশু দাবি করে নি যে,
তিনি কেবল একটি পথ
তিনি কেবল একটি সত্য
তিনি কেবল একটি জীবন
কিন্তু তিনিই পথ, তিনিই সত্য ও তিনিই জীবন বলেছেন বলেছেন।
এর মানে হল তিনিই একমাত্র পথ
তিনিই একমাত্র সত্য
ও তিনিই একমাত্র জীবন
এটি যীশুর এক্সক্লুসিভ দাবি। আমরা খ্রীস্টানরা যে এখানের সঠিক শিক্ষাটি কোন ভাবেই বাদ না দিই। যীশু এই কথা বলে উপসংহার টেনেছেন যে, এই সত্য ছাড়া কোন ব্যতিক্রম নেই "আমার মধ্যে দিয়ে না গেলে কেই পিতার কাছে যেতে পারে না।" এখানে যীশু ক্রুশের কথা বলতে শুরু করেছেন। এখন তিনি তার নিজের দিকে দৃষ্টি দিতে শিষ্যদের আহবান করছে। শিষ্যরা যেন যীশুর প্রতি নির্ভরশীল হয় যীশু তা পরিস্কার বলছেন। যীশু এখানে তাঁর নিজের বিষয় শিক্ষা দিচ্ছেন।
এটিই হল - পৃথিবীর অন্যান্য ধর্ম থেকে খ্রীস্টান ধর্মের সবচেয়ে বড় পার্থক্য। কেননা পৃথিবীর অন্যান ধর্মগুলোর মূল বিষয় হল শিক্ষা। বৌদ্ধ, মোহাম্মদ, কনফিসিাস তারা সকলেই যে, পথ, সত্য ও জীবন এই রকম শিক্ষা থেকে দূরে থেকেছেন। কিন্তু ইতিহাসে প্রভু যীশু খ্রীস্টই একমাত্র নিজের প্রতি অংশগুলি নির্দেশ করে এই শিক্ষা দিয়েছেন,