প্রিয়পাঠক, ইবরাহিমের পরে সকল নবীর আগমন, বনী ঈস্রায়েল বংশে। আর মোহাম্মাদের জন্ম তো কোরাইশ বংশে, সুতরাং ঈশ্বরের পরিকল্পনার আলোকে মোহাম্মাদ নবী এটি কোনভাবেই প্রমাণিত হয় না। আর মোহাম্মাদের জন্মের ৬১০ বছর পূর্বেই যীশু খ্রীষ্ট নিজের সমন্ধে পরিস্কার বলেছেন,
"আমিই প্রথম ও শেষ, আদি এবং অন্ত" (প্রকাশিত বাক্য ২২:১৩)
যীশু খ্রীষ্ট সকল সৃষ্টির প্রথম জাত, এবং তিনি আদি থেকেই বর্তমান তাই তিনি প্রথম। তিনি সৃষ্টির পূর্ব থেকেই, তাঁর ক্রুশে হত হওয়ার পূর্ব পরিকল্পনা ও পূর্ব জ্ঞানের বিষয়। যীশু নিজেও বার বার তার মৃত্যুর বিষয় প্রকাশ করেছিলেন। এই জন্য তিনি মানুষের পাপের জন্য ক্রুশে কোরবানি হওয়ার দিক থেকেও প্রথম এবং শেষ। কেননা আর কেউ এভাবে হত হবে না। তিনিই শেষ, ক্রুশে তার একবার মৃত্যুই যতেষ্ট।
"কারণ তিনি জগৎপত্তনের পূর্বে খ্রীষ্টে আমাদিগকে মনোনীত করিয়াছিলেন, যেন আমরা তাঁহার সাক্ষাতে প্রেমে পবিত্র ও নিষ্কলঙ্ক হই; তিনি আমাদিগকে যীশু খ্রীষ্ট দ্বারা আপনার জন্য দত্তকপুত্রতার নিমিত্ত পূর্ব হইতে নিরূপণও করিয়াছিলেন; ইহা তিনি নিজ ইচ্ছার হিতসঙ্কল্প অনুসারে, নিজ অনুগ্রহের প্রতাপের প্রশংসার্থে করিয়াছিলেন।" (ইফি ১:৪-৫)
তিনি মৃতদের থেকে প্রথমজাত (প্রকাশিত বাক্য ১:৫) যীশু নিজেও দাবি করেছেন,
"ভয় করো না, আমি প্রথম ও শেষ ও জীবন্ত; আমি মরেছিলাম, আর দেখ, আমি যুগপর্যায়ের যুগে যুগে জীবন্ত; আর মৃত্যু ও পাতালের চাবি আমার হাতে আছে " (প্রকাশিত বাক্য ১:১৭-১৮)
"আর তিনিই দেহের অর্থাৎ মণ্ডলীর মস্তক; তিনি আদি, মৃতগণের মধ্য হইতে প্রথমজাত, যেন সর্ববিষয়ে তিনি অগ্রগণ্য হন।" (কল ১:১৮ পদে)
যীশু খ্রীষ্ট এও দাবী করেছেন, "কেননা পিতা যেমন মৃতদিগকে উঠান ও জীবন দান করেন, তদ্রুপ পুত্র যাদেরকে ইচ্ছা, জীবন দান করেন" (যোহন ৫:২১)
যীশু খ্রীষ্ট সমস্ত সৃষ্টির প্রথমজাত
"ইনিই অদৃশ্য ঈশ্বরের প্রতিমূর্তি, সমুদয় সৃষ্টির প্রথমজাত; কেননা তাঁহাতেই সকলই সৃষ্ট হইয়াছে।" (কল ১:১৫ পদ )
যীশু খ্রীষ্ট ঈশ্বরের সৃষ্টির শাসনকর্তা
"যাহা তিনি খ্রীষ্টে সাধন করিয়াছেন; ফলতঃ তিনি তাঁহাকে মৃতগণের মধ্য হইতে উঠাইয়াছেন, এবং স্বর্গীয়স্থানে নিজ দক্ষিণ পার্শ্বে বসাইয়াছেন, সমস্ত আধিপত্য, কর্তৃত্ব, পরাক্রম ও প্রভুত্বের উপরে, এবং যত নাম কেবল ইহযুগে নয়, কিন্তু পরযুগেও উল্লেখ করা যায়, তৎসমুদয়ের উপরে পদান্বিত করিলেন।" (ইফি ২:২০-২৩)
যীশু মৃত্যু ও পাতালের কতৃর্ককারী
"আর তিনি সমস্তই তাঁহার চরণের নিচে বশীভূত করিলেন, এবং তাঁহাকেই সকলের উপরে উচ্চ মস্তক করিয়া মণ্ডলীকে দান করিলেন; সেই মণ্ডলী তাঁহার দেহ, তাঁহারই পূর্ণতাস্বরূপ, যিনি সর্ববিষয়ে সমস্তই পূরণ করেন।" (প্রকাশিত বাক্য ১:১৭-১৮)
"যিনি পবিত্র, যিনি সত্যময়, যিনি ‘‘দায়ূদের চাবি ধারণ করেন, যিনি খুলিলে কেহ রুদ্ধ করে না, ও রুদ্ধ করিলে কেহ খুলে না,” তিনি এই কথা কহেন; "(প্রকাশিত বাক্য ৩:৭)
স্বর্গ, অনন্তজীবন বা চুড়ান্ত পরিত্রাণ দেওয়া তাঁর অধিকার -
"যাহার কর্ণ আছে, সে শুনুক, আত্মা মণ্ডলীগণকে কি কহিতেছেন। যে জয় করে, তাহাকে আমি ঈশ্বরের ‘‘পরমদেশস্থ জীবনবৃক্ষের” ফল ভোজন করিতে দিব।" (প্রকাশিত বাক্য ২:৭)
"তোমাকে যে সকল দুঃখ ভোগ করিতে হইবে, তাহাতে ভয় করিও না। দেখ, তোমাদের পরীক্ষার জন্য দিয়াবল তোমাদের কাহাকেও কাহাকেও কারাগারে নিক্ষেপ করিতে উদ্যত আছে, তাহাতে দশ দিন পর্যন্ত তোমাদের ক্লেশ হইবে। তুমি মরণ পর্যন্ত বিশ্বস্ত থাক, তাহাতে আমি তোমাকে জীবন-মুকুট দিব।" (প্রকাশিত বাক্য ২:১০)
"যে জয় করে, সে তদ্রূপ শুক্ল বস্ত্র পরিহিত হইবে; এবং আমি তাহার নাম কোন ক্রমে জীবন-পুস্তক হইতে মুছিয়া ফেলিব না, কিন্তু আমার পিতার সাক্ষাতে ও তাঁহার দূতগণের সাক্ষাতে তাহার নাম স্বীকার করিব।" (প্রকাশিত বাক্য ৩:৫)
"যেমন তুমি তাঁহাকে মর্ত্যমাত্রের উপরে কর্তৃত্ব দিয়াছ, যেন, তুমি যে সমস্ত তাঁহাকে দিয়াছ, তিনি তাহাদিগকে অনন্ত জীবন দেন।" (যোহন ১৭: ২)
স্বর্গ ও দুনিয়াতে সর্বশ্রেষ্ঠ নামটিও যীশু খ্রীষ্টকে দেওয়া হয়েছে
"ঈশ্বরের স্বরূপবিশিষ্ট থাকিতে তিনি ঈশ্বরের সহিত সমান থাকা ধরিয়া লইবার বিষয় জ্ঞান করিলেন না, কিন্তু আপনাকে শূন্য করিলেন, দাসের রূপ ধারণ করিলেন, মনুষ্যদের সাদৃশ্যে জন্মিলেন; এবং আকার প্রকারে মনুষ্যবৎ প্রত্যক্ষ হইয়া আপনাকে অবনত করিলেন; মৃত্যু পর্যন্ত, এমন কি, ক্রুশীয় মৃত্যু পর্যন্ত আজ্ঞাবহ হইলেন। এই কারণ ঈশ্বর তাঁহাকে অতিশয় উচ্চপদান্বিতও করিলেন, এবং তাঁহাকে সেই নাম দান করিলেন, যাহা সমুদয় নাম অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ; যেন যীশুর নামে স্বর্গ মর্ত্য পাতাল-নিবাসীদের ‘‘সমুদয় জানু পাতিত হয়, এবং সমুদয় জিহ্বা যেন স্বীকার করে” যে, যীশু খ্রীষ্টই প্রভু, এইরূপে পিতা ঈশ্বর যেন মহিমান্বিত হন।" (ফিলি ২:৬-১১)
যীশু খ্রীষ্ট জ্ঞানের দিক থেকেও সবার প্রথম
কিন্তু যিহূদী ও গ্রীক, আহূত সকলের কাছে খ্রীষ্ট ঈশ্বরেরই পরাক্রম ও ঈশ্বরেরই জ্ঞানস্বরূপ। (১ করি ১:২৪)
"তথাপি আমরা সিদ্ধদের মধ্যে জ্ঞানের কথা কহিতেছি, কিন্তু সেই জ্ঞান এই যুগের নয়, এবং এই যুগের শাসনকর্তাদেরও নয়, ইহারা ত অকিঞ্চন হইয়া পড়িতেছেন। কিন্তু আমরা নিগূঢ়তত্ত্বরূপে ঈশ্বরের সেই জ্ঞানের কথা কহিতেছি, সেই গুপ্ত জ্ঞান, যাহা ঈশ্বর আমাদের প্রতাপের জন্য যুগপর্যায়ের পূর্বে নিরূপণ করিয়াছিলেন। এই যুগের শাসনকর্তাদের মধ্যে কেহ তাহা জানেন নাই; কেননা যদি জানিতেন, তবে প্রতাপের প্রভুকে ক্রুশে দিতেন না।" (১ করি ২: ৬-৮)
যীশু খ্রীষ্ট দ্বিতীয় আগমনের দিক থেকে তিনি প্রথম ও শেষ, এখন মোহাম্মাদ যদি বলে তিনি শেষ কোন দিক থেকে, যীশু তো দ্বিতীয় আগমন সবার শেষেই করছেন।
Comments